ক্যান্সারসহ অনেক প্রাণঘাতী রোগের টিকা আবিষ্কারের দাবি করেছেন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার গবেষকরা। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ক্যান্সার, হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা এবং কঠিন বাত রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো অটোইমিউনজনিত রোগসহ বিভিন্ন অসুখের টিকা ২০৩০ সালের মধ্যে প্রস্তুত করা সম্ভব হবে।
নভেল করোনাভাইরাসের অন্যতম টিকা প্রস্তুতকারী হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পাওয়া মডার্নার প্রধান মেডিক্যাল অফিসার পল বার্টন বলেন, তিনি মনে করেন, ‘সব ধরনের রোগের ক্ষেত্রে’ পাঁচ বছরের মধ্যে টিকার মাধ্যমে চিকিৎসা দিতে সক্ষম হবে তাঁর প্রতিষ্ঠান।
প্রাথমিকভাবে টিকায় প্রত্যাশিত ফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মডার্না। তাদের দাবি সত্য হলে লাখো মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনার টিকা আবিষ্কারের মাধ্যমে ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগের টিকা আবিষ্কার দ্রুততর হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের টিউমারের কথা বিবেচনায় রেখে পৃথক পৃথক ক্যান্সারের টিকা তৈরির কথাও জানিয়েছে মডার্না। প্রধান মেডিক্যাল অফিসার পল বার্টন বলেন, ‘আমাদের টিকা অত্যন্ত কার্যকর হবে। এটি লাখো মানুষের প্রাণ বাঁচাবে। আমি মনে করি, আমরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের টিউমারের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক ক্যান্সারের টিকা দিতে সক্ষম হব।’
পল বার্টন আরো বলেন, শ্বাসতন্ত্রের একাধিক রোগের ক্ষেত্রে একই টিকা ব্যবহার করা যেতে পারে, যা কভিড, ফ্লু এবং রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে মানুষকে রক্ষা করবে। এ ছাড়া বর্তমানে কোনো ওষুধ নেই, এমন বিরল রোগের জন্য এমআরএনএ থেরাপি ব্যবহার করা হতে পারে। এমআরএনএ থেরাপির মাধ্যমে কোষকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রোটিন তৈরির কৌশল শেখানো হয়।
পল বার্টন বলেন, আমি মনে করি, এখন থেকে ১০ বছর পর আমরা এমন একটি বিশ্ব দেখব, যেখানে সত্যিকার অর্থে একটি রোগের জেনেটিক কারণ শনাক্ত করা যাবে। তখন সহজ সমীকরণ হবে, জেনেটিক কারণটি শনাক্ত করে এমআরএনএ থেরাপির মাধ্যমে তা সারিয়ে তোলা।
এমআরএনএ ভিত্তিক ক্যান্সার টিকা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বেড়ে ওঠা ক্যান্সার সম্পর্কে সতর্ক করবে। এতে সুস্থ কোষগুলো সুরক্ষিত রেখেই ক্যান্সারকে ধ্বংস করা যাবে।
এর জন্য চিকিৎসকরা প্রথমে রোগীর টিউমারের বায়োপসি করে গবেষণা করবেন। আক্রান্ত কোষ নিয়ে পরীক্ষা শেষে রোগীবিশেষে পৃথক (পার্সোনালাইজড) টিকা তৈরি করা সম্ভব হবে।
বার্টন বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আমরা শিখেছি এমআরএনএ কৌশল শুধু সংক্রামক রোগ বা কভিডের জন্য নয়। এটি সব ধরনের রোগের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে। আমরা ক্যান্সার, সংক্রামক রোগ, কার্ডিওভাসকুলারসহ অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে গবেষণা করছি। সব ক্ষেত্রেই অসাধারণ অগ্রগতি দেখেছি।
শ্বাসতন্ত্রকে আক্রমণ করা ভাইরাসের ক্ষেত্রে এমআরএনএ টিকার শেষ পর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফলে মডার্না জানায়, ৬০ বা তদূর্ধ্বদের ক্ষেত্রে কাশি বা জ্বরের মতো অন্তত দুটি উপসর্গ কমাতে ৮৩.৭ শতাংশ সফলতা এসেছে। এর ওপর ভিত্তি করে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন টিকার যুগান্তকারী থেরাপি অনুমোদন দেয়। এরপর পৃথক গবেষণার ওপর ভিত্তি করে ক্যান্সারের ব্যক্তিকেন্দ্রিক টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
আমাদের পেইজ- https://www.facebook.com/dailykhoborerdakgor/
আমাদের গ্রুপ- https://www.facebook.com/groups/dailykhoborerdakgor/
আমাদের ইউটিউব- https://www.youtube.com/channel/UC9r4_s-LK0mucm34GjjmZqg